১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
নির্বাচন সামনে রেখে ‘জোট’ ও ‘আসন সমঝোতা’—রাজনীতিতে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। দীর্ঘদিন একতরফা রাজনৈতিক পরিবেশে অকার্যকর থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় ছোট–বড় সব দলই জোটবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে।
জোট গঠনে সবচেয়ে এগিয়ে বিএনপি। দলটি ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা বিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিকদের নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
অন্যদিকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনে থাকা সাত দলকে নিয়ে জামায়াতও এগোচ্ছে নির্বাচনী সমঝোতার পথে। বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশ জাসদ ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চাও নতুন জোট গঠনের প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে।
এদিকে অভ্যন্তরীণ মতবিরোধে চরম অস্থিরতা তৈরি হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি)। এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদকে নিয়ে নতুন জোটের আলোচনা থাকলেও তা এখন অনিশ্চয়তায়। ফলে এনসিপি সামনে দাঁড়িয়ে আছে দুই সম্ভাবনার মুখে—মধ্যপন্থী দলগুলো নিয়ে নতুন জোট, নাকি বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে সরাসরি আসন সমঝোতা।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানান, মধ্যপন্থী অন্তত ১০টি দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তার ভাষায়, “দেশের স্বার্থ বিবেচনায় বিএনপি কিংবা জামায়াত—যে কোনো জোটে যোগ দেওয়া নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।”
১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ধাঁচে নতুন জোট গঠনের কথা জানিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, তাদের জোট শুধু নির্বাচন নয়, আন্দোলন–সংগ্রামকেও সমান গুরুত্ব দেবে।
আসন সমঝোতা নিয়ে জামায়াতের অবস্থানও স্পষ্ট—জয়ী হওয়ার সম্ভাবনার ওপর ভিত্তি করে শরিকদের আসন ছাড়বে দলটি। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানান, আট দলের লিয়াজোঁ কমিটি কাজ করছে এবং আগামী সপ্তাহে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।
বিএনপিও যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের আসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত তফসিল ঘোষণার পর চূড়ান্ত করবে। স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, “বিএনপি মূলধারার রাজনীতিতেই রয়েছে। শরিকদের নিয়েই সরকার পরিচালনার পরিকল্পনা আমাদের।”
ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের মাধ্যমে কমিশন নির্বাচনী প্রস্তুতি চূড়ান্ত করছে।
